আমাকে যদি বলেন হিসাববিজ্ঞানের প্রাণ কি? আমি বলবো হিসাব। কারণ এই হিসাব মানেই আপনার হিসাববিজ্ঞানের প্রায় সব সম্পন্ন। হিসাববিজ্ঞানে ভালো করতে হলে আপনাকে হিসাবে ভালো হতেই হবে। আমি ধারাবাহিকভাবে হিসাব নিয়ে কিছু পর্ব লিখবো সাথে সাথে দেখাবো হিসাব কেন গুরুত্বপূর্ণ হিসাববিজ্ঞানে + এখান থেকে কি কি প্রশ্ন কিভাবে এইচ এস সি পরীক্ষায় এবং এডমিশন টেস্ট পরীক্ষায় এসেছে। আপনারা মনযোগ দিয়ে এই ব্লগ পোস্টগুলো পড়বেন আশারাখি অনেক কিছু শিখতে পারবেন। তাহলে আর বেশি কথা না বলে সরাসরি চলে যায় আসল কথায়।
এই হিসাব আসলে কি জিনিস?
সহজ কথায় লেনদেনের সংক্ষিপ্ত ও শ্রেনিবদ্ধ বিবরণীকে হিসাব বলে। অর্থাৎ ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে সংঘটিত লেনদেন থেকে হিসাব নির্ণয় করে তাকে তার প্রকৃতি অনুসারে শ্রেণিবদ্ধ করে লিপিবদ্ধ করা হয়। এই পর্যন্তই থাক, এতটুকু একটু নিজের মত করে মাথায় রাখেন। আমরা আর এটা নিয়ে কথা বাড়াবো না।
এবার আসেন, একটা কথা প্রচলিত আছে আমাদের মাঝে যে, হিসাববিজ্ঞান মানেই ছক কাটতে কাটতে আর টাকার হিসাব করতে করতেই জীবন শেষ। কি ভুল বললাম?? আচ্ছা ভুল যেহেতু বলিনি তাই চলেন একটু ছক কেটে আসি তাহলে। এই হিসাবকে হিসাববিজ্ঞানে লিপিবদ্ধ করার জন্য ২ ধরণের ছক ব্যবহার করা হয়। একটা ছকের নাম হচ্ছে T ছক / সাধারণ ছক বা হিসাবের সনাতন ছক আর আরেকটি ছকের নাম হচ্ছে চলমান জের ছক বা হিসাবের আধুনিক ছক।
হিসাবের সাধারণ বা T ছকের তিনটা অংশ থাকে- (১) হিসাবের শিরোনাম (২) হিসাবের ডান দিক এবং (৩) হিসাবের বাম দিক।
হিসাবের বাম দিককে বলা হয় – ডেবিট এবং হিসাবের ডান দিককে বলা হয় – ক্রেডিট (এই যে এটা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরিক্ষায় এসেছে কিন্তু)।
হিসাবের শিরোনাম
হিসাবের বামদিক (ডেবিট) |
হিসাবের ডানদিক (ক্রেডিট) |
(সাধারণ বা T ছকের নমুনা)
দেখেন দুনিয়াতে যত প্রকার জিনিস আছে তাদের মধ্যে আবার প্রকারভেদ আছে। যেমন ধরেন আমরা মানুষ। আমাদের মধ্যেও প্রকারভেদ আছে। ছেলে-মেয়ে, দেশি- বিদেশি, ধনী- দরিদ্র ইত্যাদি ইত্যাদি। হ্যা ঠিক ধরেছেন, এই হিসাবেরও আবার প্রকারভেদ আছে। আজকে আমরা এই পর্বে শিখবো সনাতন পদ্ধতিতে হিসাবের প্রকারভেদ। এই সনাতন পদ্ধতি এখন আর না ব্যবহার হলেও আমাদের এইচ এস সি পরীক্ষার এম সি কিউ প্রশ্নে ভালোই আসতে দেখা যায়, সেই সাথে কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয় এখান থেকে মাঝে মাঝে প্রশ্ন করে তাই এটা আমাদের বাদ দেয়া উচিত হবে না।
সনাতন পদ্ধতিতে হিসাব ২ প্রকার। যথাঃ
ব্যক্তিবাচক হিসাবঃ দেনাদার হিসাব (ডেবিট জের) এবং পাওনাদার হিসাবকে (ক্রেডিট জের) ব্যক্তিবাচক হিসাব বলে।
অব্যক্তিবাচক হিসাবঃ সম্পত্তিবাচক হিসাব এবং নামিক হিসাব (আয় ও ব্যয়) হিসাবকে অব্যক্তিবাচক হিসাব বলে।
** সনাতন পদ্ধতিতে আয় এবং ব্যয় হিসাবকে একসাথে নামিক হিসাব বলে।
ব্যক্তিবাচক হিসাবকে আবার ৩ ভাগে ভাগ করা যায়ঃ
১। স্বাভাবিক ব্যক্তিবাচক হিসাবঃ কোন ব্যক্তির নাম। যেমনঃ রহিম হিসাব, করিম হিসাব ইত্যাদি।
২। কৃত্রিম ব্যক্তিবাচক হিসাবঃ কোন প্রতিষ্ঠানের নাম। যেমনঃ জনতা ব্যাংক হিসাব, স্কয়ার কোম্পানি লিমিটেড ইত্যাদি।
৩। প্রতিনিধিত্বমূলক ব্যক্তিবাচক হিসাবঃ কোন ব্যক্তির পক্ষ্যে বা প্রতিনিধি হয়ে যে হিসাবটি ব্যবসায়ে কাজ করে। যেমনঃ মূলধন হিসাব (মালিকের প্রতিনিধি, মালিক একজন ব্যক্তি হয়, তাই এটি একটি প্রতিনিধিত্বমূলক ব্যক্তিবাচক হিসাব), ঠিক সেইভাবে ঋণ হিসাব এবং যেসকল হিসাবের পূর্বে বকেয়া বা অগ্রিম রয়েছে তাদেরকে প্রতিনিধিত্বমূলক ব্যক্তিবাচক হিসাব বলে। (এই অংশটা গুরুত্বপূর্ণ)।
তো আজকের আলোচনা এই পর্যন্তই আমাদের পরের পর্বে থাকবে আধুনিক পদ্ধতিতে হিসাবের প্রকারভেদ এবং হিসাবের জের সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা। কেমন লেগেছে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন আর গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নোট করে রাখার চেষ্টা করবেন। এখন একটু পানি পান করে রেস্ট করেন। পরের পর্বে জন্য অগ্রিম দাওয়াত।
You must be logged in to comment on this post. Login or Register